click this image
👇👇

 উনিশশো' একাত্তর সালের ১৫ই ডিসেম্বর। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে তখন এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক চলছিল ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে।

যুদ্ধ থামানোর জন্য তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনে পোল্যান্ডের এক প্রস্তাব নিয়ে তখন আলোচনা বেশ উত্তেজনাপূর্ণ।

নিরাপত্তা পরিষদে ওই আলোচনায় পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টো, যিনি এর এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে দেশটির রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পান।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে মি. ভুট্টো পোল্যান্ডের প্রস্তাব সম্বলিত কাগজ ছিড়ে টুকরো-টুকরো করে নিরাপত্তা পরিষদ থেকে বেরিয়ে আসেন।

কিন্তু মি. ভুট্টো যখন নিরাপত্তা পরিষদে তার এই তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন, ততক্ষণে পূর্ব-পাকিস্তানের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গেছে।

ঠান্ডা লড়াই

বাংলাদেশের মানুষ যখন পাকিস্তানের কাছ থেকে মুক্তির জন্য জীবনপণ লড়ছে, তখনকার পৃথিবী ছিল একেবারে ভিন্ন। দুটো ভিন্ন মেরুতে নিজেদেরকে আবদ্ধ রেখেছিল বেশিরভাগ দেশ।

আর বৃহৎ শক্তির দেশগুলো পরস্পরের সাথে ঠাণ্ডা লড়াইয়ে যুক্ত হয়েছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে কেন্দ্র করেই।

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন ছিল পাকিস্তানের পক্ষে, অন্যদিকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (যার সবচেয়ে প্রভাবশালী অংশ ছিল আজকের রাশিয়া) এবং ভারত ছিল বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পক্ষে।

ডিসেম্বর মাসের তিন তারিখে ভারত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর থেকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এবং সাধারণ পরিষদে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে।

জাতিসংঘের বাইরে আমেরিকা, চীন, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ভারতের মধ্যে তীব্র কূটনৈতিক বাদানুবাদও শুরু হয়েছিল।

পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে গিয়েছিল যে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর তীব্র চাপ তৈরি করেছিলেন।

আমেরিকার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের মাধ্যমে ভারতকে থামানো এবং পাকিস্তানকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করা।

ভারতের ওপর এক ধরণের সামরিক হুমকি তৈরি করতে বঙ্গোপসাগরে রণতরীও পাঠিয়েছিল আমেরিকা।